উহুদ যুদ্ধ ইসলামি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ যা ৬২৫ খ্রিস্টাব্দে (হিজরি ৩ সনে) সংঘটিত হয়। এটি মদিনার মুসলমানদের এবং মক্কার কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত দ্বিতীয় বড় যুদ্ধ। এই যুদ্ধের মূল কারণ ছিল মক্কার কুরাইশরা বদরের যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল।
যুদ্ধের কারণ:
- বদরের যুদ্ধে কুরাইশদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চাওয়া।
- মক্কার বাণিজ্যিক পথে বাধা সৃষ্টি হওয়া।
- ইসলামের ক্রমবর্ধমান প্রভাব কুরাইশদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো।
উহুদ পাহাড়ের পাদদেশে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
মুসলিম বাহিনী:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী ৭০০ জন ছিল।
কুরাইশ বাহিনী:কুরাইশদের নেতৃত্বে ছিল আবু সুফিয়ান। তাদের সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ৩,০০০।
যুদ্ধের ঘটনা:
যুদ্ধের শুরুতে মুসলমানরা ভালোভাবে লড়াই করে এবং কুরাইশদের পরাজিত করে। মহানবী (সা.) উহুদ পাহাড়ের পাশে একদল তীরন্দাজকে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং তাদের বলে দেন যে, তারা কোনো অবস্থাতেই পাহাড় ছাড়বে না। মুসলমানরা যখন বিজয়ী হওয়ার পথে ছিল, তখন তীরন্দাজ দল যুদ্ধের ময়দান লুট করার জন্য পাহাড় ছেড়ে চলে আসে। কুরাইশ বাহিনী এই সুযোগ নিয়ে পেছন থেকে মুসলমানদের আক্রমণ করে। এতে মুসলিম বাহিনী বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অনেক সাহাবি শহীদ হন।
পরিণতি:মুসলমানরা যুদ্ধের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ৭০ জন সাহাবি শহীদ হন, যার মধ্যে মহানবীর (সা.) চাচা হামজা (রা.) অন্যতম। এই যুদ্ধ মুসলমানদের জন্য একটি শিক্ষা হয়ে দাঁড়ায়।
শিক্ষণীয় বিষয়:
- মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা মানার গুরুত্ব।
- ঐক্য ও শৃঙ্খলার প্রয়োজনীয়তা।
- আল্লাহর উপর নির্ভরশীল থাকার পাশাপাশি মানব প্রচেষ্টার গুরুত্ব।
উহুদ যুদ্ধ মুসলমানদের জন্য একটি বড় শিক্ষা ও পরীক্ষার অধ্যায় হয়ে থাকে।
Comments
Post a Comment